সবজি চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে যশোরের মুনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের শাহপুর ও হায়াতপুরের কৃষকরা। এই খানে বছরের ১২ মাস সবজি চাষ করা হয়। শাহপুর ও হায়াতপুর গ্রামের অন্তত ৫০০ পরিবার সবজি চাষ করে এখন স্বাবলম্বী।
উপজেলার পশ্চিমে রাজগঞ্জ বাজারের পাশেই শাহপুর ও হায়াতপুর সবজি চাষের মাঠ। মাঠের পর মাঠ নানা ধরনের সবজি ছড়িয়ে আছে। গ্রাম দু’টিতে বিশাল খেত জুড়ে ১২ মাসই বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হচ্ছে। আর এই খেতে কাজ করছে শত শত নারী-পুরুষ ।
কৃষি বিভাগ জানায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এই মাঠে সবজি চাষিদের সব সময় উৎসাহ এবং সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: আবাদ মৌসুমে সারের দাম বৃদ্ধি, ফরিদপুরে আমন উৎপাদনে শঙ্কিত চাষিরা
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সরোজমিনে শাহপুর ও হায়াতপুরে দেখা গেছে, সবজি খেতগুলোতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, ঢেঁড়স, মুলা, লাউ, শিম, বরবটি,ক্ষীরা, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো, লালশাক, পালংশাক, কাঁচ কলা, বেগুন, শসা, মেটে আলু, ডাটা,পটল, ঝিংগা, উচ্ছে, কাকরোল, গাজর, চিচিঙ্গা ও ওলসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের ও বারোমাসি সবজিতে ভরপুর। বিশাল এই মাঠে উত্তম কৃষি চাষের মাধ্যমে নিরাপদ ও বালাইমুক্ত সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে।এখানে সবজি চাষে জৈব সারও ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে ফসলের পোকা নিধনে পরিবেশবান্ধব ‘আলোক ফাঁদ’
স্থানীয় চাষি রবিউল ইসলাম জানান, এই মাঠের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যশোর, খুলনা ও ঢাকার বড় বড় বাজারেও সরবরাহ করা হয়।
শাহপুর গ্রামের চাষি শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ২ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। সেই খেত থেকে বুধবারও (১৫ সেপ্টেম্বর) তিনি তিন মণ শিম তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন। দামও ভালো পেয়ে খুব খুশি তিনি।
একই গ্রামেরে সবজি চাষি ফয়সাল আহম্মেদ, রাজু, মেহেদীসহ অনেকেই জানান, কষ্ট করে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে মাঠে কাজ করে বিভিন্ন ধরনের সবজি ফলাই। সেই সবজি তারা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলা-উপজেলা শহরে সরবরাহ করে। সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবার রাজগঞ্জ বাজারে বড় হাট বসে। এই দু’দিন শাহপুর ও হায়াতপুরের কৃষকরাই বেশিভাগ সবজি বিক্রির জন্য এই হাটে আনে। রাজগঞ্জ বাজার থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে বিভিন্ন জেলা শহরে নিয়ে যান ব্যাপারিরা।
আরও পড়ুন: রূপসা পাড়ে অফ সিজনাল তরমুজের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
স্থানীয় ইউনিয়ন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা এসএম মারুফুল হক ও হাসানুজ্জামান জানান, কৃষি বিভাগ থেকে রাজগঞ্জের শাহপুর ও হায়াতপুর মাঠের সবজি চাষিদের সবধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া নতুন জাত ও নতুন ফসল সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রদর্শনী প্লটও স্থাপন করা হয়।